যৌন নিপীড়ন ইস্যুতে

দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এদেশের বেশির ভাগ মেয়েরই এসবে কিছু যায় আসে না নববর্ষে টিএসসিতে হওয়া যৌন নিপীড়নের ঘটনার প্রতিবাদে যে কয়টি সমাবেশ হয়েছে তাতে আমি মনে করতে পারি না আমার কোনো সহপাঠিনীকে দেখেছি। অথচ সেদিন তারা ঠিকই কেএফসি-বিএফসিতে খেতে গিয়েছে, চেক-ইন দিয়েছে, সেলফি আপলোড দিয়েছে, দিনশেষে আমাকে জিজ্ঞেস করেছে, “কি পেলি?” আমি ওদের প্রশ্নের উত্তর দেইনি। আমি জানি আমি কি পেয়েছি। আমি সেখানে শুধুমাত্র ঐ মেয়েগুলোর জন্যই দাঁড়াইনি, নিজের জন্যও দাঁড়িয়েছি। আমি প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে বেড়াতে যাই, আমি চাই না এ ধরনের ঘটনা আমার সাথে ঘটুক। আমার বড় আপুটার সাথে ঘটুক। ছোট বোনটার সাথে ঘটুক। বান্ধবীদের সাথে ঘটুক। আমি সকলের নিরাপত্তা চাই।

Loading

নীল-গোলাপীর ফ্যাশনের ইতিহাস

২ মাস আগে আমার ক্লাস টু পড়ুয়া একমাত্র মামাত ভাইকে আমার মা আদর করে একজোড়া গোলাপী কনভার্স কিনে দেয়। সে এগুলো পড়ে ক্লাসে ঢোকার সাথে সাথে তাকে নিয়ে হাসিতামাশা শুরু হয়। একারণে সে আর জুতোগুলো পড়েনি। গোলাপী রংটাকে মানুষ কেন এভাবে দেখে তার আসল কারণ শুনলে তোমাদেরও হাসি ছাড়া উপায় থাকবেনা।

Loading

সভ্যতার ক্রমবিকাশে নারীর মাইনরিটি

আমাদের সুবিধাবাদীতার যুগে সমতা শব্দটার কী নির্বিচার মৃত্যু! পৃথিবীর অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী হওয়া সত্ত্বেও তারা ‘সেকেন্ড জেন্ডার’ কিংবা ‘মাইনর’ বা অপ্রধান ! নারীশিক্ষার সুযোগের জায়গাটা বর্তমানে ত্রুটিপূর্ণ ও মেকিভাবে তৈরি করে দেওয়াটাও নারীকে কৌশলে শান্ত রাখার এক প্রক্রিয়া,যেমনটা ইংরেজরা ভারতবর্ষের ওপর দেখিয়েছিল। তবে এতেও নারীরা থেমে নেই,অনেকটা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে হলেও তারা চলছে। প্রথাবিরোধী লেখক প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ তাঁর ‘নারী’ বইতে লিখেছেন আমাদের দেশের শৃঙ্খলিত নারী সমাজের কথা। বলেছেন, ‘নারী সম্ভবত মহাজগতের সবচেয়ে আলোচিত পশু।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘পুরুষ নারীকে দেখে দাসীরূপে, করে রেখেছে দাসী; তবে স্বার্থে ও ভয়ে কখনো কখনো স্তব করে দেবীরূপে। পুরুষ এমন প্রাণী, যার নিন্দায় সামান্য সত্য থাকতে পারে; তবে তার স্তব সুপরিকল্পিত প্রতারণা।’ভারতবর্ষের সেই সতীদাহ প্রথার কথাই ধরা যাক না!

Loading

পুরুষ বাক্স

যেখানে বাবা তার ছেলেকে শেখায় কান্না না করতে। কেননা কান্না হচ্ছে মেয়েদের কাজ। এটি একটি ছোট্ট উদাহরণ। ছেলেদের আরো ভয়ঙ্কর সব শিক্ষা দিয়ে বড় করা হয়। সমাজে নারীরা যদি বাস করে কারাগারে, তাহলে পুরুষেরা বাস করে একটি বাক্সে। বাক্সটি তাকে গড়ে তুলে পুরুষ হিসেবে, মানুষ করতে পারে না। সে জন্মের পর থেকেই প্রশিক্ষিত হতে থাকে এই বাক্সের নিয়ম অনুযায়ী। যাতে বলা আছে তুমি পুরুষ, তোমার কাঁদা চলবে না, রাগ ছাড়া কোনো আবেগের প্রকাশ তোমাকে মানায় না, নারী থাকবে তোমার অধীনে, নারীকে অধীনস্ত করার মাধ্যমে প্রকাশ পাবে তোমার পুরুষত্ব। যে পুরুষ এর বিপরীতে যায়, সে ধর্ষিত হয়, মানসিক ভাবে। তাকে সবাই চিহ্নিত করে পুরুষত্বহীন হিসেবে। যদিও শারীরিকভাবে অন্য পুরুষের সাথে তার কোনো পার্থক্য নেই। সমাজে মেয়েদের পোশাক, পছন্দের রঙ, প্রসাধনী আলাদা করা আছে। পুরুষের এসব পছন্দ করাও পাপ। তার এসব পছন্দ হল মানে সে তার পুরুষত্ব হারালো। তাই পুরুষের মানুষ হওয়ার চেয়ে ‘পুরুষ’ হওয়াটা অনেক বেশী জরুরি। এতে যদি তাকে বিবেকহীন হতে হয়- সমস্যা নেই। বেলুন হারিয়ে গেলে তার কাঁদা চলবে না।

Loading