খিদের সমাধান বটিকা ইন্ডিকা

যাদের বেড়ে ওঠা সত্যজিৎ রায়ের অমর সব সৃষ্টির সাথে, তারা বটিকা ইন্ডিকা নামের আজব ট্যাবলেটের কথা নিশ্চয়ই জেনে থাকবেন। প্রফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুর তৈরী বটিকা ইন্ডিকার একটি ট্যাবলেট খেলে টানা দশদিন খিদে লাগতো না। ব্যোমযাত্রায় এই ট্যাবলেটই প্রাণ বাঁচিয়েছিলো তাঁর।

প্রফেসর শঙ্কু কিংবা শঙ্কর, কাকাবাবুদের মতো যাদের এ্যাডভেঞ্চারের তীব্র নেশা তাদের জন্য বটিকা ইন্ডিকার কোনো ট্যাবলেট যদি সত্যি সত্যি থাকতো তবে তো বেশ হতো। বটিকা ইন্ডিকার ফর্মুলা হয়তো শঙ্কু ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো বিজ্ঞানীর জানা থাকলেও তার উৎপাদন হয়তো এতোটা সুলভ নয়। তাই ভয়ংকর এ্যাডভেঞ্চারে খাদ্য ছাড়া কয়দিন টিকে থাকা যাবে সে প্রশ্ন তোলার যৌক্তিকতা থেকেই যাচ্ছে।

খিদে  নিয়ে কথা বলতে গেলে, প্রথম প্রশ্নটা হলো খিদে কেন লাগে? –  খুব সহজ করে বললে পরিশ্রমের ফলে আমাদের যে পরিমাণ ক্যালরী খরচ হয়,  সে পরিমাণ ক্যালরীর খাদ্যগ্রহণ না করলে আমরা ক্ষুধার্ত অনুভব করি। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা একবেলা সময় মতো না খেলেই অস্থির হয়ে পড়েন। কেউ কেউ আবার দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে পারেন।

কারোর খিদে অবশ্য চোখেরও!

আমাদের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য আর পানীয় অপরিহার্য। একজন মানুষ সর্বোচ্চ ২১ দিন পর্যন্ত কোন রকম খাবার না খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে। পানির ক্ষেত্রে অবশ্য সর্বোচ্চ ৭ দিন। কেননা, মানব দেহের প্রতিটি কোষের কাজের জন্য পানির প্রয়োজন।

খাদ্য, পানীয়র প্রয়োজন অবশ্য তাপমাত্রা ও পরিবেশের ওপর অনেকটা নির্ভর করে। মরুভূমির তীব্র গরমের মধ্যে পানি না খেয়ে আর কতোক্ষণ টিকে থাকা যাবে?! অন্যদিকে শীতকালে একটু কম পানি খেলেও যেনো হয়! সাধারণত স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ১০০ ঘন্টা পর্যন্ত আমরা পানি না খেয়ে থাকতে পারি।

সুতরাং, বটিকা ইন্ডিকার মতো আশ্চর্য ট্যাবলেট যতোদিন না সুলভ হচ্ছে ততোদিন পর্যন্ত এ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের রহস্য-রোমাঞ্চের খোঁজে কোথাও বের হওয়ার আগে হিসেব করে নিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় খাবার।

ওয়েট! একটা সুখবর দিয়েই লেখাটা শেষ করি। প্রফেসর শঙ্কু বাদেও হালের কয়েকজন বিজ্ঞানী চেষ্টা করে যাচ্ছেন খিদানাশক তৈরীর। এ ব্যাপারে বেশ খানিকটা অগ্রসরও হয়েছেন তাঁরা। এটি অবশ্য ট্যাবলেট নয়, পাউডার। ফিনল্যান্ডের ভিটিটি প্রযুক্তি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান গবেষক জুহা-পেক্কা পিটকানেন জানিয়েছেন, জৈব চুল্লিতে জল, কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং অণুজীবের তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই পাউডার তৈরি করা যাবে। এ পাউডারের মধ্যে রয়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি প্রোটিন এবং ২৫ শতাংশেরও বেশি কার্বোহাইড্রেট। বাকি অংশের মধ্যে রয়েছে ফ্যাট এবং নিউক্লিক অ্যাসিড। তবে অণুজীবের মাত্রার তারতম্যের মাধ্যমে পাউডার তৈরির সময় প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট এবং নিউক্লিক অ্যাসিডের মাত্রার রদবদল সম্ভব।

খিদেনাশক এই পাউডার নিয়ে চলছে আরো বিস্তর গবেষণা। তাতেই জানা যাবে খাদ্যের বিকল্প হতে পারবে কী না এই পাউডার।

লেখকঃ শিক্ষার্থী, ফিন্যান্স বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

Loading

1 thought on “খিদের সমাধান বটিকা ইন্ডিকা”

  1. Sir ,.
    Botica indeca namok medicen kotha ami Satyajit royer lekha shankur bomjatreer golpe porece . sir ai botica khede nasok medecen kothay pauya jay.
    R ai medecen er ki rechas cholce and kothay cholce . Ami ai medecen jonno rechas korte chi parle akto infor mation deben.

    Reply

Leave a Comment